অমিতাভ বচ্চন এর জীবনের স্মরনীয় ঘটনা
————————————————
আমি তখন ক্যারিয়ারের তুঙ্গে। একদিন প্লেনে করে যাচ্ছিলাম। খুব সাধারণ শার্ট আর প্যান্ট পরিহিত একজন ভদ্রলোক আমার পাশে বসেই যাচ্ছিলেন ৷ দেখে উনাকে একজন শিক্ষিত এবং মার্জিত মধ্যবিত্ত মানুষ মনে হয়েছিলো। অন্য সহযাত্রীরা আমায় চিনতে পেরে খুব উৎসাহিত হয়ে অটোগ্রাফ নিচ্ছে। কিন্তু পাশে বসা ভদ্রলোককে লক্ষ্য করলাম উনার কোন ভ্রুক্ষেপ নেই।
উনি একমনে একটা খবরের কাগজ পড়ছিলেন আর মাঝে মাঝে জানালার বাইরে তাকিয়ে কি যেন ভাবছিলেন। চা পরিবেশন করা হলো, ঠোঁটের আগেই থ্যাঙ্কস লেগেই আছে। আমাকে পাত্তাই দিচ্ছে না।
আমার উনার প্রতি কৌতুহল বেড়েই চলছিলো। তাই উনার সাথে কথা বলার জন্য উনার দিকে তাকিয়ে হাসলাম। উনিও একটা সৌজন্যমূলক হাসি ফিরিয়ে দিয়ে বললেন ‘হ্যালো’, এরপর কিছু সৌজন্যমূলক কথোপকথন শুরু হলো ।
একসময় আমিই নিজে থেকে সিনেমা প্রসঙ্গ উত্থাপন করলাম।
জিজ্ঞাসা করলাম: আপনি সিনেমা দেখেন?
উনি বললেন: কখনো-সখনো, শেষ যে সিনেমাটা দেখেছি তাও প্রায় এক বছরের বেশী হয়ে গেছে।’
বললাম: আমি ঐ ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতেই আছি
উনি উৎসাহিত হয়ে বললেন: দারুণ ব্যাপার!
তা আপনি কি করেন: বললাম, আমি একজন অভিনেতা
প্রত্যুত্তরে বললেন: দারুণ! ব্যাস! ওই পর্যন্তই!
প্লেন ল্যান্ড করার পর আমি ভদ্রলোকের দিকে করমর্দনের জন্য হাতটা বাড়িয়ে দিয়ে বললাম: আমার নাম অমিতাভ বচ্চন।
উনি মাথা নত করে আমার হাতটা ঝাঁকিয়ে দিয়ে বললেন: আপনার সাথে পরিচয় হয়ে দারুণ লাগলো!
আমার নাম জে.আর.ডি. টাটা (Jehangir Ratanji Dadabhoy Tata, chairman of TATA Group)
চমকে উঠলাম আমি!
ঐ দিনের ঘটনা থেকে একটা বিষয় শিখেছি, যত বড়ই হই না কেনো, আমার থেকেও বড় কেউ আছে কিন্ত তাঁর দৃষ্টিটা সর্বদাই মাটির দিকে!